কারাবাখের আকাশে আজারবাইজানের পতাকা, আক্রমণে এলাকা ছাড়ছে আর্মেনিয়া


অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশের সময় : অক্টোবর ৪, ২০২০ । ৭:১৯ পূর্বাহ্ণ
কারাবাখের আকাশে আজারবাইজানের পতাকা, আক্রমণে এলাকা ছাড়ছে আর্মেনিয়া

আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে কয়েক দিন ধরে তীব্র লড়াই চলছে দক্ষিণ ককেশাসের বিরোধপূর্ণ এলাকা নাগোর্নো-কারাবাখকে কেন্দ্র করে । এই অঞ্চল নিয়ে দুটি দেশের মধ্যে এর আগেও থেকে থেকে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে, সামরিক সংঘাতও হয়েছে, কিন্তু সেগুলো সবই ছিল সীমিত পরিসরে।

২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ রোববার সকালে হঠাৎ করে শুরু হয়ে যাওয়া এই যুদ্ধে বড় বড় কামান, ট্যাঙ্ক, ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে। পুরো এক সপ্তাহের সংঘর্ষের পর আর্মেনিয়ার দখল থেকে মাদাগিজ শহরের পর নিজেদের আরো ৭টি এলাকা শত্রু মুক্ত করেছে আজারবাইজানের সেনাবাহিনী। গত ৩ অক্টোবর শনিবার আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম অ্যালিয়েভ এই ঘোষণা দেন।  

আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট টুইটার বার্তায় জানান, আজারবাইজানের সেনাবাহিনী রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে শত্রুদের হাত থেকে নাগার্নো কারাবাখের টের্টার জেলার তালিশ গ্রাম, চক্সিরলি, আশাগি ম্যারালিয়ান, জাব্রাইল জেলার মেহদিলি, শেবি, গাইজাগ ও ফিজুলি জেলার আশাগি আবদুররহমানিয়ালি গ্রাম মুক্ত করেছে।

প্রেসিডেন্ট অ্যালিয়েভ ইতোপূর্বে ঘোষণা করেছিলেন যে, (শত্রদের হাত থেকে মুক্ত করে) মাদাগিজ শহরে পতাকা উত্তোলন করেছে আজারবাইজানের সেনারা। টুইটারে এই প্রেসিডেন্ট লেখেন, আজ আজারবাইজানের সেনাবাহিনী মাদাগিজের ওপরে আমাদের পতাকা উত্তোলন করেছে। মাদাগিজ এখন আমাদের।

আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের সশস্ত্র বাহিনী গত ২৭ সেপ্টেম্বর নাগার্নো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে ফের সংঘর্ষে জড়ায় ।

উল্লেখ্য, তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত ছিল আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজান ১৯৯১ সালের আগ পর্যন্ত । দুইটি স্বাধীন দেশ হিসেবে আলাদা হয় সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর। গত চার দশক ধরেই নাগার্নো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে এই দুটি দেশ দ্বন্দ্বে লিপ্ত রয়েছে। নাগার্নো-কারাবাখ আন্তর্জাতিকভাবে আজারবাইজানের অঞ্চল হিসেবেই স্বীকৃত । যদিও আর্মেনিয়ানরা এটি নিয়ন্ত্রণ করে আসছিল জাতিগতভাবে।

এদিকে আর্মেনিয়া জানিয়েছে, এই যুদ্ধে আরো ৫১ জন সেনা নিহত হয়েছেন। ইতোমধ্যেই দেশটির মোট ২০৭ জন সেনা নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে, আর্মেনিয়ার আরো বহুগুণ ক্ষয়ক্ষতির স্বীকার হয়েছে বলে আজারবাইজানের দাবি । কিন্ত তারা সেটা কৌশলগত কারণে হয়তো গোপন করছে।

আজারবাইজানের সামরিক খাতে কতো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সে বিষয়ে বাকুর পক্ষ থেকে এখনো কিছু বলা হয়নি। তবে ৩০ জনের মতো বেসামরিক নাগরিক নিহতের খরব জানায় দেশটি।

এদিকে আজারবাইজানি সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে, আর্মেনিয়ানরা দখলকৃত আজারবাইজানীয় অঞ্চল ছেড়ে চলে যেতে শুরু করেছে। নাগার্নো-কারাবাখের খবরেদী শহরের কেন্দ্রস্থলে জড়ো হয়ে আর্মেনিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে বলে জানা গেছে।

সংবাদ মাধ্যম আরআইএ নভোস্টি’র বরাতে জানা গেছে, খোজাভেন্দ এবং আগদের শহরগুলো খালি হয়ে গেছে।

সাবেক সোভিয়েতভুক্ত এ দুটি দেশ ১৯৯০ সাল থেকেই আঞ্চলিক বিরোধে জড়িয়ে আছে। ২০১৬ সালে এসে তা মারাত্মক রূপ নেয়। এ প্রেক্ষাপটে জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেস অবিলম্বে এই সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।

মহাসচিবের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেছেন, গুতেরেস অবিলম্বে উভয়পক্ষকে এই যুদ্ধ বন্ধের জন্য জোরালো আহ্বান জানান। বিলম্ব না করে অর্থপূর্ণ আলোচনায় ফেরারও আহ্বান জানিয়েছেন। সূত্র : ডেইলি সাবাহ

আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০