সর্বশেষ :

লাভের গুঁড় কিভাবে পিঁপড়ায় খায়


অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশের সময় : জানুয়ারি ২২, ২০২১ । ৮:৫১ পূর্বাহ্ণ
লাভের গুঁড় কিভাবে পিঁপড়ায় খায়

চিনি শিল্প বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী শিল্প। এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে কৃষকদের কারিগরি সহায়তা প্রদান, চিনির ব্যবহার এবং এর ব্যবহারের আধুনিকায়ন করতে হবে। সামাজিক মাধ্যমে একটি পোস্ট ভাইরাল হয়েছে এখানে তুলে ধরা হলো:

বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ কতোটা দেশপ্রেমিক এটা আমরা বারবার প্রমাণ করেছি। আবারো সেটা প্রমাণিত হলো।

নিজ দেশে উৎপাদিত লাল চিনি বিক্রি না হওয়ার অজুহাতে চিনিকল শ্রমিকদের বেতন না দেয়া এবং বন্ধের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশী লাল চিনি ক্রয় সংক্রান্ত লেখার পর অনেক কিছু জানা গেলো।

প্রথমত দেশের মোটামুটি সব মানুষই জানে লাল চিনি কতোটা স্বাস্থ্যসম্মত এবং সাদা চিনি বা ‘সাদা বিষ’ স্বাস্থ্যের জন্য কতোটা ক্ষতিকর। (আমি এই জানাটাকেও খুব গুরুত্বপূর্ণ মনেকরি।)

যেহেতু মানুষ এই বিষয়টা জানে, তাই বেশীরভাগ মানুষ লাল চিনিই কিনতে চায়। কিন্তু লাল চিনি কেনায় সবচেয়ে বড় বাধা বাজারে অপ্রাপ্যতা। আমার সর্বশেষ লেখার পর সারাদেশ থেকে মানুষ যোগাযোগ করেছেন, সবার একটাই অভিযোগ কোথাও এই লাল চিনি পাওয়া যায় না! অথচ আমাদের জানানো হলো উল্টোটা যে, দেশে উৎপাদিত এই চিনি নাকি বিক্রি হয়না তাই চিনিকল বন্ধ করা হবে! কি ভয়াবহ!

মুলত এই দেশে এক ধরনের অসাধু ব্যবসায়ী-আমলা সিন্ডিকেট আছে। যাদের কারণে দেশের কোনো প্রতিষ্ঠান টিকতে পারে না। এদের কারণেই কৃষক-শ্রমিকরা তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য দাম-মজুরী পায় না।

আখচাষীরা ঠিকই আখ উৎপাদন করছে, শ্রমিকরা আখ থেকে চিনিও ঠিকই উৎপাদন করছে। কিন্তু উৎপাদনের পরের কাজ যাদের, শ্রমিকদের মাথার উপর বসিয়ে দেয়া আমলাতন্ত্র; তারা আখ কেনার সময় একবার টাকা লুট করছে আবার উৎপাদিত চিনি ঠিকভাবে বাজারজাত না করে কৃত্তিম সংকট তৈরী করে চিনি আমদানিকারকদের থেকে ঘুষ নিচ্ছে। যাকে বলে ‘লাভের গুঁড় পিঁপড়া খাচ্ছে’।

দ্বিতীয়ত দেশীয় শিল্পগুলোকে টিকিয়ে রাখতে সরকারের কার্যকর কোনো পলিসি না নেয়া। এর অন্যতম কারণ, সরকারের ভেতরে প্রভাবশালী যে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট আছে তারা সবাই মুলত ট্রেডার্স। এরা নিজেরা কেউ কিছু উৎপাদন করে না। এরা ওপারের জিনিস এপারে এনে বিক্রি করে মুনাফা করে। তাই তাদের সামগ্রিক নীতিও উৎপাদনমুখী নয়।

তৃতীয়ত দেশীয় শিল্প, কলকারখানাগুলো আধুনিকায়ণ না করা। যার ফলে অনেক ক্ষেত্রে উৎপাদন খরচও বেড়ে যায়। এটার কারনও মুলত ওই একই। উৎপাদনমুখী নীতি না হওয়ায় প্রভাবশালী ট্রেডিং বাণিজ্য সিন্ডিকেট চায় দেশীয় শিল্পগুলো মুখ থুবরে বন্ধ হয়ে যাক।

আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি বাংলাদেশের বেশীরভাগ মানুষ খুবই দেশপ্রেমিক মানুষ। দেশীয় শিল্পের বিকাশে এটাকে শক্তি হিসেবে কাজে লাগানো সম্ভব। শুধু দরকার সঠিক নীতি এবং কার্যকর কৌশল ও নেতৃত্ব।

সরকারকে বলবো চিনিকলগুলো বন্ধের চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন। দেশে উৎপাদিত লাল চিনি সারাদেশে সহজলভ্য করুন। এইদেশের মানুষ চাইলে বাজারের সব লাল চিনি আমরা একদিনেও কিনে ফেলতে পারি। হ্যাঁ, এটা কথার কথা না, দেশীয় শিল্প রক্ষায় প্রয়োজনে আমরা সেটাই করবো।

তবে আমরা চাইনা ‘লাভের গুঁড় আর পিঁপড়ায় খাক’। দেশের স্বার্থে পিঁপড়াগুলোকে ১০/২০ বছরের জন্য হলেও বাক্সবন্দি করুন।

বার্তা বিডি/ সোস্যালমিডিয়া

আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১৩১৫
১৬১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭
৩০৩১